26 July 2009

অবসরে জেমস্!

অবসরে আছেন জেমস্। যে বাজারে ধনী-গরিব নির্বিশেষে এখন সবাই নতুন অ্যালবাম তৈরি এবং প্রকাশের বিষয়ে উৎসবমুখর সেই বাজারে জেমস্ বসে আছেন নিশ্চুপ হয়ে। দর্শক হয়ে নীরবে ঈদের বাজারের প্রযোজক বনাম শিল্পী-সুরকারদের গোল্লাছুট খেলা উপভোগ করছেন আপন মনে। পুরনো সহযোদ্ধা গীতিকার দেহলভীকে নিয়ে নতুন অ্যালবামের প্রাথমিক কাজ শুরু করেও থামিয়ে দিয়েছেন সমপ্রতি। কথা ছিল এ অ্যালবামটির মধ্য দিয়ে জেমস্ আবারও জ্বলে উঠবেন 'দুঃখিনী দুঃখ করোনা'র মতো করে। কারণ মান-অভিমান ভুলে এবার তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন গীতিকার দেহলভী। সে যাই হোক, চলতি সপ্তাহে হঠাৎ করেই অ্যালবাম প্রসঙ্গে জেমস্ জানান, না অ্যালবাম করছি না। এই ঈদটায় অ্যালবাম প্রকাশে অবসর নিয়েছি। দেশ-বিদেশে স্টেজ শো করছি, ভাল আছি। নতুন অ্যালবামের কাজ তৈরি করেও থামিয়ে দিলেন। কণ্ঠে খানিক অভিমানের সুর। একটু খুলেই বলুন না। জেমস্ বলেন, একটা অ্যালবাম তৈরি করতে কত মেধা, সময়, শ্রম, অর্থ আর ভালবাসার বিনিয়োগ হয় সেটা অন্যদের বুঝার কথা নয়। আমি অন্যের অ্যালবামের কথা বলছি না, আমার কথাই আমি বলছি। কারণ আমি ছাড় দিতে শিখিনি, জানিও না। আমার কাজ আমার কাছে আগে শতভাগ নম্বর পেতে হবে তারপর যাবে প্রযোজক-পরিবেশক হয়ে শ্রোতাদের কাছে। আর অ্যালবাম হিট-ফ্লপ নিয়েও আমি ভাবি না। সেটা আরেকটা ব্যাপার। একটা মানুষ সারাজীবন কোয়ালিটি মেনটেইন করে চলতে পারে, তবে সারাজীবন হিট গান পয়দা করতে পারে না। যাই হোক আমি যে একটা অ্যালবাম তৈরি করবো সেটা প্রকাশ করার মতো সামর্থ্যওয়ালা প্রযোজক কই? আমি তো দেখছি না। তাহলে অ্যালবাম তৈরি করে নিজেই ফেরি করবো নাকি। সঙ্গে এও বলি, প্রতি বছর অ্যালবাম প্রকাশ করতে হবে এমনও তো কথা নেই। অ্যালবাম না বের করলে আমি হেরে যাবো, পচে যাবো- আই ডু নট বিলিভ দিস টাইপ অব রাবিস গসিপ। আমি আমার মতো করে ভাল আছি এবং থাকবো। এ আত্মবিশ্বাস আছে। প্রশ্ন ছিল একক না হয় করছেন না, এই ঈদে অন্য কোন দ্বৈত অ্যালবাম করছেন কি? অনেক দিন তো এমন অ্যালবাম হচ্ছে না। জেমস্ ফের একই সুরে আরেকটু ধারালোভাবেই বলেন, একদমই না। এসব অ্যালবাম তৈরি করে প্রকাশের মতো শক্ত মেরুদণ্ড এখনকার প্রযোজক-আয়োজকদের মধ্যে নেই। হলে অবশ্যই করবো। অতীতে করেছি না? এ তো নতুন কিছু নয়। স্টেজ শো'র দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে চলতি সময়ে সর্বোচ্চ জনপ্রিয় এবং দামি তারকা জেমস্। যিনি বরাবরই অডিও অ্যালবামসহ ক্যারিয়ারের প্রায় প্রতিটি বিষয় হিসাব করে চলেন অর্থ সম্মানী এবং কাজের মানকে সর্বোচ্চ বিবেচনার মধ্য দিয়ে। এ কারণে সংগীতের দীর্ঘ সফল ক্যারিয়ারে কাজের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। সফলতা সে অনুপাতে অনেক বেশি। যদিও সব শেষে একটি এনার্জি ড্রিংক-এর বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে খানিকটা অবিচার করেছেন নিজের সফল স্বচ্ছ ক্যারিয়ারের প্রতি। জেমস্ ঘরানার দর্শকরাও খানিক মনোকষ্টে ভুগছেন এ বিজ্ঞাপনটির দুর্বল নির্মাণ শৈলীর বিচারে। জেমস্ বলেন, এ বিষয়ে আমিও খানিকটা ওয়াকিবহাল। বিষয়টা হচ্ছে আমি ভিডিও নির্মাতা নই। আর টাকার লোভে পড়ে খারাপ কাজ করেছি সেটাও নয়। আবার এটাও সত্যি বিজ্ঞাপনটি তার টার্গেট পিপলকে ভেবে তৈরি হয়েছে। ফলে সবার যে ভাল লাগবে তাও নয়। তবে যাদের ভাল লাগেনি, তাদের জন্য সুখবর হচ্ছে আমি আবারও নতুন বিজ্ঞাপনে নতুনভাবে আসছি। পণ্য একটাই, তবে এবারের নির্মাণশৈলী নতুন কিছু দেবে বলে বিশ্বাস। এখন সে পরিকল্পনাটাই চলছে। এদিকে জেমস্ সূত্রে জানা যায়, মুম্বই প্লে-ব্যাক, প্রীতমের সঙ্গে ব্যান্ড মেট্রো'র ঘোষিত ওয়ার্ল্ড টু্যর এবং হিন্দি অ্যালবাম তৈরির বাস্তবিক অর্থে নতুন কোন অগ্রগতি নেই। এখন দেখা যাক, মুম্বই কেন্দ্রিক ম্রিয়মাণ সংবাদ আর আসন্ন ঈদে নতুন অ্যালবাম না করার দায় নগর বাউল কতটা এড়াতে পারেন শুধু নতুন একটি বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে।

No comments:

Post a Comment