20 September 2011

মমতাজের গোপন বিয়ে


আবারও বিয়ে করলেন জনপ্রিয় গায়িকা ও সরকারদলীয় এমপি মমতাজ। দীর্ঘদিন তারই হাসপাতালের ডাক্তার চঞ্চলের সঙ্গে প্রেমের পর তাদের বিয়ে হয়। পাত্রের পুরো নাম ডা. মো. মঈন হাসান চঞ্চল। তিনি মানিকগঞ্জ সদরের মমতাজ চক্ষু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক। চঞ্চলের বাবা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ও মা ডা. জাহানারা বেগম যশোর শহরে লাল দিঘীর পাড়ে অবস্থিত সালেহা ক্লিনিকের মালিক। চঞ্চলের বাবা-মা’র সম্মতিতে আয়োজন করেই এ বিয়ে হয়েছে। গতকাল মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, বিয়ের পর চঞ্চল-মমতাজ যশোরে একবার এসেছেন। বিয়ের আগেও একবার এসেছিল। তিনি বলেন, ওরা একে অন্যকে পছন্দ করে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে। আমরাও তা মেনে নিয়েছি। মমতাজের আগের স্বামী মানিকগঞ্জের পৌর মেয়র রমজান আলীর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ডিভোর্স হয়। আর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বিয়ে হয়। জানা গেছে, মমতাজের প্রথম স্বামী ছিল বিখ্যাত গায়ক রশিদ বয়াতি এরপর মানিকগঞ্জ পৌরসভা চেয়ারম্যান রমজান আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় মমতাজের। তবে চঞ্চলেরও এটা দ্বিতীয় বিয়ে। চঞ্চলের ছোট দুই বোন চৈতি ও চন্দ্রা ঢাকার উত্তরার একটি বেসরকারি মেডিকেলে পড়াশোনা করতেন। গত বছর নভেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চৈতির বিয়েতে নিমন্ত্রিত অতিথি হয়ে এসেছিলেন মমতাজ। চঞ্চলের পূর্ব পরিচিত ও দীর্ঘদিনের বান্ধবী মমতাজের সঙ্গে ওই বিয়ের দিনগুলোতে অতিমাত্রায় ঘোরাঘুরি করেছিলেন দুজন। একপর্যায়ে চঞ্চলের বাবা বলেন ‘তোমরা যে দুজন খুব বেশি ঘোরাঘুরি করছো তাতে লোকজন কানাঘুষা করছে। তোমরা বিয়ে করবে কিনা বলো? এভাবেই কথাবার্তার শুরু তারপর বিয়ে হয়। চঞ্চলের মা তার একজন ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীকে জানিয়েছেন ‘এবারের ঈদে যশোরে অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। কিন' ঢাকায় মমতাজের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকায় মমতাজ আসতে পারেননি।’ ১৯৮৯ সালে এসএসসি ও ১৯৯১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর যশোর ছাড়েন চঞ্চল। বাজিতপুরের বেসকারি জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করেছেন ১৯৯৬ সালে। অধ্যয়নরত অবস্থায় সহপাঠী ও জহিরুল ইসলামের সম্পর্কের নাতনিকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। চঞ্চলের ডা. বাবা এটা মেনে নেননি প্রথমে তবে পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় আবারও বিয়ে হয়। ওই বিয়েতে আমন্ত্রিত একজন অতিথি মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন প্রথম বিয়ের কথা। কিছুদিন পর লন্ডনে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য গেলে সেখানে কিছুদিন থাকার পর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। চঞ্চল ফিরে আসেন দেশে। এরপর কয়েক বছর ধরে চঞ্চলের বাবা-মা নতুন একটা মেয়ে খুঁজছিলেন ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য। এমনই একজন মানবজমিনকে জানিয়েছেন ক’দিন আগে আমি গিয়েছিলাম চঞ্চলের মায়ের কাছে একটা পাত্রীর সন্ধান নিয়ে। তখনই ডা. জাহানারা জানান মমতাজের সঙ্গে তার ছেলের বিয়ের কথা
-মানবজমিন, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১১

মমতাজকে বিয়ের কথা কবুল করলেন ডা. মঈন হাসান চঞ্চল। তবে ক্ষোভ ঝাড়লেন পিতা-মাতার ওপর। বললেন, কেন যে বাবা-মা বিষয়টি প্রকাশ করে দিলেন তা বুঝতে পারছি না। এ নিয়ে গত দু’দিন ধরে বাবা-মা’র সঙ্গে আমার ঝগড়া হচ্ছে। চঞ্চল বলেন, আপনারা রিপোর্ট করার পর থেকে মমতাজও আমার সঙ্গে কথা বলছে না। বিয়ের কথা প্রকাশ করেননি কেন? এ প্রশ্নে চঞ্চল বলেন, তা কিভাবে প্রকাশ করবো? কারণ মমতাজ এখনও রমজানকে ডিভোর্স দেয়নি। গতকাল দীর্ঘ আলোচনায় মমতাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও বিয়ে নিয়ে নানা প্রসঙ্গ টেনে আনেন চঞ্চল। বলেন, ২০০৫ সালে মমতাজ চক্ষু হাসপাতালে চাকরি নেয়ার পর থেকেই আমার প্রতি মমতাজের বিশেষ নজর পড়ে। পরে আমাকে দু’-দু’টো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। আমার প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস। এভাবেই ধীরে ধীরে আমরা খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ি। মমতাজের পরিবারেও আমার একটা আলাদা জায়গা ছিল। আমাদের সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের চেয়েও বেশি কিছু। কিন্তু আমার বাবা-মা তার সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা পছন্দ করছিলেন না। তাই তারা সব সময় বিয়ের কথা বলতেন। চঞ্চল বলেন, মমতাজ তার স্বামী রমজান আলীকে পছন্দ করতো না। তাদের মধ্যে ২-৩ বছর ধরে কোন সম্পর্কই ছিল না। মমতাজ একা হয়ে পড়ে। তখন আমিই তাকে সময় দিয়েছি। আমরা একসঙ্গে নানা দেশ ঘুরেছি। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, লন্ডন, অস্ট্রেলিয়া অনেক দেশে গেছি। এই তো মাত্র কয়েকদিন আগে একসঙ্গে দুবাই থেকে ঘুরে এলাম। ঢাকার বাইরেও অনেক জায়গায় গেছি। অনেক সময় মমতাজের সিডিউল আমিই ঠিক করে দিতাম। তার বাসা ছিল আমার বাসা। তার মহাখালীর বাসায় রাতের পর রাত কাটিয়েছি। হ্যাঁ, এ নিয়ে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের। কিন্তু আমরা কোন পাত্তা দেইনি। বিয়ে নিয়ে লুকোচুরি করছেন কেন- এমন প্রশ্নে চঞ্চল বলেন, আমি এ বিষয়ে আর কোন কথা বলতে চাই না। আপনারা মমতাজের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তিনিই সব বলতে পারবেন।
-মানবজমিন, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১

No comments:

Post a Comment